প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদা “লেভেল প্লেইংফিল্ড প্রস্তুত বলে জাতির সামনে সম্পূর্ণ অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন। কেননা গনমাধ্যমে প্রতিফলিত চিত্র প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মন্তব্যের সম্পূর্ন বিপরীত। বাস্তব চিত্র দেখার জন্য ইসি নুরুল হুদাকে আমার বাড়িতে অতিথি হওয়ার আহবান জানাচ্ছি। বাস্তব চিত্র দেখার জন্য ইসি আমার বাড়িতে একরাত অবস্থান করলে “প্লেইংফিল্ড” কতটা লেভেল তা বুঝতে পারতেন। সোমবার দুপুরে বরিশাল-১ আসনের (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী, সাবেক সাংসদ ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক এম, জহির উদ্দিন স্বপন তার গৌরনদীর সরিকলস্থ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন।
দুপুর সাড়ে ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে ১০ পৃষ্টার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জহির উদ্দিন স্বপন। তিনি লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, গভীর দুঃখের বিষয় হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে আমি রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার পর থেকে গৌরনদী পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মো. হারিছুর রহমান আমার প্রতিপক্ষ দলের (আ.লীগের) কতিপয় নেতাকির্মদের নিয়ে লাগাতারভাবে প্রকাশ্যে উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়ে প্রকাশ্য জনসভায় আমার প্রান নাশের হুমকি দিচ্ছেন। তার সকল চক্রান্ত ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আমি গত ১২ ডিসেম্বর নিজ বাড়িতে এসে প্রচার কাজ শুরু করেছি। আমার কর্মসূচীতে বিএনপির যে সকল নেতাকর্মিরা অংশ নিয়েছিল তাদের ওপর সন্ত্রাসীরা নিপীড়ন নির্যাতন চালাচ্ছে। এদের নির্যাতন থেকে নারী ও শিশুও রেহাই পাচ্ছে না। গত ১২ ডিসেম্বর নিজ বাড়িতে অবস্থান নেওয়ার পর থেকে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মিরা আমার নির্বাচনী এলাকার ২৯ জন নেতাকর্মির ওপর হামলা চালিয়ে জখম করেছে। ২৬ জন নেতাকর্মির বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও তছনছ করেছে। ১০ নেতাকর্মির দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি হতে দিচ্ছে না।
লিখিত বক্তব্যে জহির উদ্দিন আরো অভিযোগ করেন, আমার কর্মিদের পোষ্টার লাগাতে দিচ্ছে না, তাদের মারধর করে পোষ্টার ছিনিয়ে নিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। মাইকিং করতে গেলে কর্মিদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। ধানের শীষের মিছিলে মোটর সাইকেল উঠিয়ে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। নেতাকর্মিদের ভয়ভিিত দেখিয়ে বাধ্য করে আ.লীগে যোগদান ও নৌকার কর্মসূচীতে যোগ দিতে বাধ্য করছে।
গনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচনই সরকার পরির্বতনের একমাত্র মাধ্যম পথ। বর্তমান সরকার দেশে ভোটার বিহীন নির্বাচনের সংস্কৃতি চালু করেছে। যা দেশব্যাপি থাকলে চরম বহিঃপ্রকাশ রয়েছে বরিশাল-১ আসনে। আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসি রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারকে অফিশিয়ালি চিঠি দিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আজ অবদি নির্বাচন কমিশনারের আদেশ কার্যকর হয়নি। স্বপন নির্বাচন কমিশন ও প্রধান কমিশনারের প্রতি আহবান জানান, যতটুটু সময় আছে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করুন, ইতিহাসে নাম লেখা থাকবে। অন্যথায় উদ্ধুত পরিস্থিতির দায়ে এড়াতে পারবেন না।
জাতীয় পর্যায়ের ঐক্যজোটের হেভিওয়েট অনেক প্রার্থী ঝুকি নিয়ে প্রচারানা চালাতে গিয়ে হামলার স্বীকার হয়েছেন। আপনি ১২ ডিসেম্বর থেকে নিজ বাড়িতে অবস্থান নিলেও কোন প্রচার প্রচারনায় নেই বিষয়টি ভোটারদের প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আপনি কি শেষ পর্যন্ত এভাবেই ঘরে বসেই নির্বাচন পরিচালণা করবেন এক প্রশ্নের জবাবে জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, সংঘাত, সংঘর্ষ এড়াতে আমি কিছুটা সময় ও কৌশল নিয়ে এগুচ্ছি। তাছাড়া বৈরী পরিস্থিতির মোকাবেলায় আমি নেতাকর্মিদের নিয়ে গেরিলা কায়দায় প্রচারনা চালাচ্ছি এবং ১১৭টি কেন্দ্রে ওই কেন্দ্রের নেতাকর্মিদের নিয়ে ভোটযুদ্ধ মোকাবেলায় সব ধরনে প্রস্তুত করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় নেতাকর্মিরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বরিশাল ও গৌরনদীতে কর্মরত বিভিন্ জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।